কিভাবে সুন্দর করে কথা বলবেন জেনে নিন

সুন্দর করে কথা বলার সহজ উপায় 

সুন্দর করে কথা বলার সহজ উপায়
একটু চিন্তা করুন তো একজন মানুষ কে আপনি চেনেন না, জানেন না, তার বংশ পড়াশোনা কোন কিছু আপনারা অবগত না, তবুও মানুষটির সাথে দুই মিনিট কথা পরেই তার সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা আপনি করে ফেলতে পারেন, পরবর্তী মিনিট গুলোতে তার সাথে আপনার আচরণ কেমন হবে তার একটা পরিকল্পনা আপনা আপনি আপনার মাথার মাঝে তৈরি হয়ে যায়। বলতে পারেন কি এর কারণ কি? এর কারণ হলো তার কথা বলার ধরন এবং অভিব্যক্তি।একজন মানুষকে রিপ্রেজেন্ট করে তার কথা বলার ধরণ। বাহ্যিক সৌন্দর্যের অন্যতম একটি উপাদান হচ্ছে সুন্দর করে কথা বলা। আপনার ব্যক্তিত্বের একটি বড় অংশ হলো কথা বলার ধরণ। আপনি হয়তো দেখতে সুন্দর না। আপনার হয়তো অনেক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে হয়তো আপনি শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ না। এই সব কিছুকে ছাপিয়ে আপনাকে সকলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসতে পারে শুধুমাত্র আপনার সুন্দর করে কথা বলা। সুন্দর করে বলতে পারার সবচেয়ে পজিটিভ দিক গুলো গুলো আত্মবিশ্বাসী থাকা যায়, উদ্যমী হওয়া যায়, অন্যের চোখে ইম্প্রেশন তৈরি করা যায় মানুষকে সহজে কনভেন্ট করা যায়। আপনি যদি একজন সফল মানুষ হতে চান সবার আগেই সবকটি গুণ আপনার মধ্যে থাকাটা জরুরি।

এবার একটু দেখি সুন্দর করে কথা না বলতে পারলে কি হয়ঃ

বিশাল বড় তালিকার মাত্র কয়েকটি তুলে ধরছি,
প্রথমেই আপনাকে সবাই ভুল বুঝবে,আপনারা হতাশা তৈরি হবে।মানসিক হতাশা সৃষ্টি হবে,ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুর পাকতে থাকবেন।সব সময় নিজের মধ্যে একটা অশাস্তিতে খুজে পাবেন।সুন্দর করে কথা বলাটা যে খুব বেশি কঠিন এমনটা কিন্তু নয়। এর জন্য একটু সচেতন হওয়া এবং কিছু দিন অন্তত নিজের কথা বলার একটা ফিল্টার বসিয়ে চর্চা করা। কোন কথাটা বলবেন, আর কোন কথাটা বলবেন না। একবার ভেবে দেখুন, এক সুন্দর করে কথা বলাটা যদি আপনাকে এতগুলো সুবিধা দিতে পারে আপনি কি তার জন্য সামান্য একটু কষ্ট করতে পারবেন না।

তাহলে আসুন সুন্দর করে কথা বলার কিছু টিপস জেনে নেইঃ

No 1: হাসি মুখে কথা বলতে হবে

প্রথমেই আপনাকে হাসি মুখে কথা বলতে হবে।বলুন তো পৃথিবীর সকল মানুষকে সব চেয়ে সুন্দর লাগে কখন?
ঠিক ধরেছেন,যখন সে হাসে।এবার ভাবুন তো কোন দোকানে যেতে আপনার ভালো লাগে।যে সব সময় হাসি মুখে আন্তরিকতার সাথে কথা বলে নাকি যে সব কালো করে ঘুমুট হয়ে বসে থাকে। চোখ বন্ধ করে একবার ভাবুন তো কোন মানূষটাকে আপনার ভালো লাগে। দেখবেন হাসি মুখে থাকা মানুষগুলো আপনার ভালো লাগার যায়গা দখল করে আছে।তাই সৃষ্টি কর্তার সৃষ্টি এই অপরুপ গূণটিকে ব্যবহার করুন।

No 2: নেতিবাচক কথা ব্যবহার করবেন না

দৈনন্দিন জিবনে কখনো কারো সাথে নেতিবাচক কথা ব্যবহার করবেন না।কারন নেতিবাচক কথা হতাশা সৃষ্টি করে ও শুন্যতা তৈরি করে। একবার এক দম্পতি তাদের পারিবারিক সমস্যা নিয়ে একজন বিচারকের কাছে গেলেন। বিচারক তাদের প্রসঙ্গে জানলেন ঐ মহিলা তার স্বামিকে প্রতিদিন বাজার প্রসঙ্গে বলে ডাল নেই,চাল নেই,সবজি নেই, মাছ নেই,নাই নাই শুনতে শুনতে ভদ্রলোক একটি শুন্যতা অনুভব করেন।তখন বিচারক তাদের পরামর্শ দিলেন এখন থেকে কথাগুলো একটি গুড়িয়ে বলবে।নাই এর জায়গায় বলবেন লাগবে।যেমন চাল লাগবে,ডাল লাগবে সবজি লাগবে এই রকম।তাহলে আর কথার মধ্যে শুন্যতা পাওয়া যাবে না।
তাই প্রতিটি নেতিবাচক কথার ইতিবাচক শব্দ বের করে এই গুলা বলার চেষ্টা করুন।

No 3: বিতর্কে জরাবেন না

বিতর্ক মানে এক পক্ষকে হারানা এক পক্ষকে ছোট করা।
কাউকে ছোট করে কখনো কারো মন জয় করা যায় না।
বুদ্ধিমান মানুষ কখনো বিতর্কে লিপ্ত হয় না।বরং তারা বুদ্ধিকে ব্যবহার করে বিতর্ক এড়ানোর জন্য। রবিন্দ্রনাথ গীতাঞ্জলির জন্য নোবেল পুরুস্কার পান ১৯১৩ সালে পশ্চিমাদের অনেকেরই এটা সহ্য হচ্ছিলো না।একবার এক পশ্চিমা সাহেব রবিন্দ্রনাথকে বলেই বসলেন,গীতাঞ্জলী বইটি দারুন হয়েছে।কে আসলে এটা লিখে দিয়েছিলো তোমার হয়ে।সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে এল কবিগুরুর বুদ্ধিদীপ্ত উত্তর তিনি বললেন তার আগে বল দেখি কে তোমাকে পড়ে দিয়েছিলো গীতাঞ্জলির মত কাব্য।একবার নিজেকে কবিগুরুর জায়গায় বসিয়ে দেখুন তো আপনি কি উত্তর দিতেন।তাই নিজের বুদ্ধিকে ব্যবহার করিন তর্কে লিপ্ত না হয়ে।

No 4: Person দেখে কথা বলুন

কাকে কি বলছেন কথা বলার সময় এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। 
বন্ধুদের সাথে যেমন কথা বলেন এই রকম কথা যদি একজন মুরব্বির সাথে বলেন তাহলে তো হবে না।
তাই কথা বলার আগে ঐ ব্যক্তিটি কি রকম কথা বললে impress হবে তার কথা শুনে আগে বুঝুন তারপর নিজে কথা বলা শুরু করুন।

No 5:কম বলুন বেশি শুনুন

স্রষ্টা মানুষকে ২ টি কান একটি মুখ দিয়েছেন তাই শুনতে হবে বেশি বলতে হবে কম।কথা বলার চেয়ে শুনার প্রতি বেশি মনোযোগি হোন।কারন ভালো বক্তার চেয়ে ভালো শ্রুতা একজন মানুষকে বেশি আকর্ষণীয় করে।মনে রাকবে জ্ঞানী কথা বলেন আর প্রজ্ঞাবান শুনেন।

No 6: পর্যাপ্ত পরিমান শব্দ জানুন

হোক বাংলা বা ইংরেজিতে প্রতিটা ভাষার কেত্রে পর্যাপ্ত শব্দ জানা আবশ্যক। এতে করে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না যে এই শব্দের পর আপনি কোন শব্দ ব্যবহার করবেন।আমরা দৈনন্দিন জিবনে যেসব শব্দ ব্যবহার করি বাংলা অভিধান খুলে তার সমার্থক শব্দ দেখে নিতে পারেন।অথবা এমন কিছু শব্দ খুজে নিতে পারেন যে গুলা আমরা সাধারন কথায় খুব কম বলে থাকি।এবং তা প্রয়োগ করুন উপযুক্ত ক্ষেত্র বুঝে। এতে আপনার কথা যেমন সুন্দর হবে তেমনি শ্রুতার মনে আপনার জ্ঞান সম্পর্কে ভালো ধারনা জন্মাবে।

No 7: Body Language

আপনার কথা বলার ভঙ্গি শ্রুতার মনে আকর্ষণ তৈরি তাই কথা বলার সময়।তাই এই সময় বডি Language ঠিক রেখে কথা বলুন।অতিরিক্ত কোন কিছু ভালো না।
কথার সাথে যেন অঙ্গ বঙ্গি খাপ খায় সেই চেষ্টা করুন।
কারু কাধে হাত দিয়ে কথা বলবেন না।কারু গায়ে খুচা দিয়ে আপনার দিকে মনোযোগ ফিরানোর চেষ্টা করবেন না।আপনার যদি এমন কোন অভ্যাস থাকে এখনি পরিহার করুন। কারন আপনার বডি Language প্রকাশ করবে আপনার আত্নবিশ্বাস।

তো বন্ধুরা এই ছিলো ছোট্ট কয়েকটি টিপস আসা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
সবাই ভালো থাকুন,
সুস্থ থাকুন।
আর পাশেই থাকুন Blognet24.com এর।
                               
Previous Post Next Post