রমজান ২০২০ |রমজান মাসে আমাদের করণীয় ও বর্জণীয় | ২০২০ সালের রমজান মাসের ক্যালেন্ডার

রমজান ২০২০ |রমজান মাসে আমাদের করণীয় ও বর্জণীয় | ২০২০ সালের রমজান মাসের ক্যালেন্ডার

আসছালামু আলাইকুম প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা আর মাত্র কিছুদিন বাকি রমজান ২০২০ চলে আসছে। আমাদের মুসলমানদের গোনাহ মাফের মাস রমজান ২০২০। এই রমজান মাসকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

রহমত,মাগফিরাত ও নাজাত। প্রথম ১০ দিন রহমতের মাঝের ১০ দিন মাগফিরাতের এবং শেষ ১০ দিন নাজাতের। এই রমজান মাসে পবিত্র কোরআন মাজিদ নাজিল করা হয়েছে। 

রমজান ২০২০ |রমজান মাসে আমাদের করণীয় ও বর্জণীয় | ২০২০ সালের রমজান মাসের ক্যালেন্ডার

রমজান ২০২০ |রমজান মাসে আমাদের করণীয় ও বর্জণীয় | ২০২০ সালের রমজান মাসের ক্যালেন্ডার

রমজান ২০২০ |রমজান মাসের করণীয়


এক রোজা রাখাঃ-আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, হে ঈমানদারগণ, তোমাদের ওপর রোযা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পারো।-সূরা বাকারা (০২) : ১৮৩
হযরত আবু হুরায়রা রাদি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন তোমরা রমজানের চাঁদ দেখবে তখন রোযা রাখবে। যখন শাওয়ালের চাঁদ দেখবে তখন থেকে রোযা বন্ধ করবে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে ত্রিশ দিন রোযা রাখবে।-সহীহ বুখারী : ১৯০৯

দুই. তারাবীহ নামাজ পড়াঃ-বরকতময় মাহে রমজানের দিন-রাত উভয়টিই মূলত ইবাদতের জন্য। দিনের ইবাদত হলো রোযা যা শরীয়তে ফরজ, আর রাতের ইবাদত হলো তারাবীহ নামাজ যা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। এ আমল ফরজ না হলেও এর ফযীলত ও মর্যাদা অনেক। হযরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি পূর্ণ ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে সওয়াবের আশায় রমজানের রাতে তারাবীহ আদায় করে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।-সহীহ বুখারী : ২০০৯

২০২০ সালের রোজার ক্যালেন্ডার | রোজার ক্যালেন্ডার ২০২০

★তিন. কোরআন তেলাওয়াত করাঃ-রোযা এবং রমজানের সঙ্গে কোরআনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এ জন্যই রমজানে কোরআন নাযিল হয়েছে এবং এ জন্যই নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মুবারাকে কোরআন তেলাওয়াতের খুব গুরুত্ব দিতেন। এ প্রসঙ্গে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদি. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সবচেয়ে বেশি দানশীল ও বদান্য, রমজানে তাঁর দানশীলতা ও বদান্যতা অনেক বেড়ে যেত। প্রত্যেক রমজানে জিবরাঈল আ. তাঁর সঙ্গে মিলিত হতেন এবং পুরো কোরআন একে অপরকে শোনাতেন।-সহীহ বুখারী : ০৬

★চার. সাহরী খাওয়াঃ-রোযার প্রস্তুতির জন্য যে আহার করা হয় তার নাম সাহরী। সাহরী খাওয়া সুন্নত। পেট ভরে খাওয়া জরুরি নয়, এক ঢোক পানি পান করলেও সাহরীর সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা সাহরী খাও। কেননা, সাহরীতে বরকত রয়েছে।-সহীহ মুসলিম : ১০৯৫

অন্য হাদীসে এসেছে, সাহরী খাওয়া বরকতপূর্ণ কাজ। সুতরাং তা ছেড়ে দিয়ো না। যদিও তা এক ঢোক পানি দিয়ে হোক না কেন। কেননা, যারা সাহরী খায় আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণ তাদের জন্য রহমতের দুআ করেন।-মুসনাদে আহমাদ : ১০৭০২
সুবহে সাদেকের কাছাকাছি সময়ে সাহরী খাওয়া মুস্তাহাব। তবে এত দেরি করা মাকরূহ- যে সুবহে সাদেক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয়।

২০২০ সালের রোজার ক্যালেন্ডার | রোজার ক্যালেন্ডার ২০২০

পাঁচ. ইফতার করাঃ-সারা দিন রোযা রাখার পর সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে যে আহার করা হয় তার নাম ইফতার। এটা শরীয়তে অনেক বড় একটি আমল। এ আনন্দপূূর্ণ আমলের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে বড় পুরস্কার। ইফতার যেহেতু অনেক বরকতের তাই এই বরকতপূর্ণ আমল শুরু করতে বিলম্ব করতে নিষেধ করা হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, লোকেরা যতদিন প্রথম সময়ে ইফতার করার বিষয়ে যত্নবান হবে ততদিন তারা কল্যাণের পথে থাকবে।-সহীহ বুখারী : ১৯৫৭

★ছয়. রোযাদারকে ইফতার করানোঃ-হযরত যায়েদ ইবনে খালেদ রাদি. থেকে বর্র্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কোনো রোযাদারকে ইফতার করাবে, সে তার (রোযাদারের) অনুরূপ প্রতিদান লাভ করবে। তবে রোযাদারের প্রতিদান থেকে বিন্দুমাত্রও হ্রাস করা হবে না।-সুনানে তিরমিযী : ৮০৭
সাত. তাওবা-ইস্তিগফার করা
আল্লাহ তাআলা এ মাসে অসংখ্য জাহান্নামীকে মুক্তি দান করেন। যেমন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ এ মাসের প্রতিরাতে অসংখ্য জাহান্নামীকে মুক্তি দান করেন।-মুসনাদে আহমাদ : ১৮৭৯৪
সুতরাং আমাদের কর্তব্য তাওবা-ইস্তিগফার করা। কেননা, যে ক্ষমা চায় তাওবা করে তাকেই আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। অন্য কাউকে নয়।

★আট. দুআ করাঃ-রোযার মাধ্যমে মুমিন বান্দা আল্লাহর এতই নৈকট্য অর্জন করে যে, যতক্ষণ সে রোযা অবস্থায় অথবা রোযার প্রস্তুতির অবস্থায় থাকে (অর্থাৎ রাত-দিন) ততক্ষণ তার কোনো দুআ ফেরত দেওয়া হয় না, সমস্ত দুআ কবুল করা হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, প্রত্যেক মুসলিম (রমজানে) যে দুআ করে তা কবুল করা হয়।-মুসনাদে বায্যার : ৩১৪১
এ মাস দুআ কবুলের মাস। তাই আমাদের উচিত বেশি বেশি দুআ করা।

২০২০ সালের রোজার ক্যালেন্ডার | রোজার ক্যালেন্ডার ২০২০

★নয়. ইফতারের আগ মুহূর্তে দুআ করাঃ-ইফতারের সময় দুআ কবুল হয়। আব্দুল্লাহ ইবনে মুলাইকা বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদি. থেকে শুনেছি তিনি বলছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ইফতারের সময় রোযাদারের একটি দুআ কবুল করা হয়।
আব্দুল্লাহ ইবনে মুলাইকা বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমরকে ইফতারের সময় এ দুআ করতে শুনেছি, আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বি রাহমাতিকা আল্লাতি ওসিআত কুল্লা শায়ইন আন তাগফিরলি’। অর্থাৎ, হে আল্লাহ, আমি তোমার দরবারে সেই রহমতের উসিলায় আবেদন করছি যা সকল বস্তুকে বেষ্টন করে রেখেছে, তুমি আমাকে মাফ করে দাও। (মুসতাদরাকে হাকেম : ১/৫২৯, হাদীস নং : ১৫৬৭) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইফতারের সময় আল্লাহর কাছে এ দুআ করতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং : ১৭৫৩)

২০২০ সালের রোজার ক্যালেন্ডার | রোজার ক্যালেন্ডার ২০২০


রমজান ২০২০ | রমজান মাসে কি কি বর্জণীয় দেখুন


এক অশ্লীল কথা না বলা এবং শোরগোল না করাঃ-রোযা অবস্থায় অশ্লীল কথাবার্তা, শোরগোল ও ঝগড়া-ফ্যাসাদ থেকে বিরত থাকা জরুরি। হাদীস শরীফে এসেছে, তোমাদের কেউ যখন রোযা অবস্থায় থাকে তখন যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং শোরগোল না করে। আর কেউ যদি তার সঙ্গে ঝগড়া করে, গালি দেয়, তা হলে সে যেন শুধু বলে দেয়, আমি তো রোযাদার। (অর্থাৎ তোমার সাথে বিবাদ করার এবং গালির জবাব দেওয়ার সুযোগ আমার নেই।)-সহীহ বুখারী : ১৯০৪

অপর এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কত রোযাদার এমন আছে, (রোযা অবস্থায় অশ্লীল কথা ও কর্ম থেকে বিরত না থাকার ফলে) ক্ষুধা ও পিপাসা ছাড়া রোযা থেকে সে আর কিছু লাভ করতে পারে না। তদ্রƒপ অনেক রাত জাগরণকারী এমন আছে যে তার রাত্রিজাগরণ থেকে জেগে থাকার কষ্ট ছাড়া আর কিছু পায় না।-সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৬৯০

দুই.মিথ্যা কথা না বলাঃ-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও ইরশাদ করেছেন, যে রোযা রেখেছে অথচ মিথ্যাচার পরিহার করেনি, তার এই কৃত্রিম পানাহার বর্জনের কোনো প্রয়োজন আল্লাহর নেই।-সহীহ বুখারী : ১৯০৩

তিন.অনর্থক কথা বা কাজ না করাঃ-হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়া.বলেন,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, রোযা শুধু পানাহার বর্জন করার নাম নয়; বরং রোযা হলো অনর্থক কথা ও কাজ এবং অশ্লীল কথা বর্জন করা।-মুসতাদরাকে হাকেম : ১/৫৩৯, হাদীস নং : ১৬০২

২০২০ সালের রোজার ক্যালেন্ডার | রোজার ক্যালেন্ডার ২০২০

★চার.গীবত না করাঃ-হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে দুজন মহিলা উপস্থিত হয়ে (দরজার বাইরে থেকে) অভিযোগ করল, রোযার কারণে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। পিপাসার কারণে প্রাণ ওষ্ঠাগত প্রায়। এ অবস্থা শুনে তিনি লোকমারফতে তাদের বমি করার আদেশ দিলেন। দেখা গেল, গোশতের টুকরা ও তাজা রক্ত বের হচ্ছে।
সাহাবায়ে কেরাম রাদি. অবাক হলেন। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এরা হালাল খাদ্য দ্বারা সাহরী করে রোযা রেখেছে, কিন্তু রোযা অবস্থায় হারাম খেয়েছে। অর্থাৎ মানুষের গীবত করেছে। আর গীবত করার অর্থ হলো মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া।-মুসনাদে আহমাদ : ২৩৬৫৩

বন্ধুরা উপরে উল্লেখিত রমজান মাসে আমাদের করণীয় ও বর্জণীয় বিষয় গুলো সামান্য তুলে ধরা হয়েছে। আসা করি তোমরা এগুলো আমল করবে।

২০২০ সালের রোজার ক্যালেন্ডার | রোজার ক্যালেন্ডার ২০২০

বন্ধুরা রমজান ২০২০ মাস আসলে আমাদের রমজানের ক্যালেন্ডার ২০২০ এর সবার প্রয়োজন হয়। তাই আমরা আগে রোজার ক্যালেন্ডার ২০২০ তোমাদের মাঝে শেয়ার করেছি। তোমাদের যাদের ২০২০ সালের রোজার ক্যালেন্ডার লাগবে নিচে লিংক দেওয়া হলো দেখে নিবেন। এখানে সকল বিভাগের রোজার ক্যালেন্ডার ২০২০ দেখতে পারবে।

ক্লিক করে রোজার ক্যালেন্ডার ২০২০ দেখুন

টাগঃরমজান ২০২০,২০২০ সালের রমজানের ক্যালেন্ডার,২০২০ সালের রোজার ক্যালেন্ডার, রমজানের ক্যালেন্ডার ২০২০,রোজার ক্যালেন্ডার ২০২০,রমজান মাসে করণীয় ও বর্জণীয়, সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২০,২০২০ সালের রমজানের সময়সূচি, রোজার সসময়সূচি ২০২০   
                               
Previous Post Next Post